লাইলাতুল কদর বেজোড় রাতে খোঁজার নির্দেশ


 🔰লাইলাতুল কদর (শবে কদর) এটি রমাদানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোর মধ্যে এক রাতে সংঘটিত হয় বলে নবী মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) উল্লেখ করেছেন।


📌১. লাইলাতুল কদর বেজোড় রাতে খোঁজার নির্দেশ


আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

“তোমরা লাইলাতুল কদরকে রমাদানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তালাশ করো।”

(সহীহ বুখারী: ২০১৭, সহীহ মুসলিম: ১১৬৯)


📌২. লাইলাতুল কদরের রাত ২৭তম হতে পারে


ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

“কেউ যদি লাইলাতুল কদর অন্বেষণ করতে চায়, তবে সে যেন তা রমাদানের শেষ সাত রাতে খোঁজে।”

(সহীহ বুখারী: ২০২১, সহীহ মুসলিম: ১১৬৫)


🔰 লাইলাতুল কদর ইবাদতের মর্যাদা


আবু হুরাইরা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

“যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরে ঈমান ও সওয়াবের আশায় সালাত আদায় করবে, তার পূর্ববর্তী সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।”

(সহীহ বুখারী: ১৯০১, সহীহ মুসলিম: ৭৬০)


🤲লাইলাতুল কদরে দোয়া করার উপদেশ


আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত:

আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! যদি আমি জানতে পারি কোন রাতটি লাইলাতুল কদর, তাহলে আমি কোন দোয়া করবো?

তিনি বললেন:

“اللَّهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّي”

(উচ্চারণ: “আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন, তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নি”)

অর্থ: “হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাশীল, ক্ষমা করতে ভালোবাসো, অতএব আমাকে ক্ষমা করো।”

(সহীহ তিরমিযী: ৩৫১৩, ইবনে মাজাহ: ৩৮৫০)


🟢লাইলাতুল কদরের গুরুত্ব ও ফজিলত


আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কুরআনে বলেন:

“লাইলাতুল কদর হলো এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।”

(সূরা আল-কদর: ৩)


🟢 লাইলাতুল কদরে দান-সদকার গুরুত্ব ও ফজিলতঃ


লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়েও উত্তম রাত, যেখানে ইবাদত-বন্দেগি ও দান-সদকার সওয়াব সাধারণ রাতের তুলনায় অনেক বেশি বেড়ে যায়। কুরআন ও হাদীসের আলোকে এই রাতে দান-সদকার গুরুত্ব সম্পর্কে আলোচনা করা হলো:


১. লাইলাতুল কদরে দান করলে ৮৩ বছর ৪ মাস দান করার সমান সওয়াব!

আল্লাহ বলেন:

“লাইলাতুল কদর এক হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।” (সূরা আল-কদর: ৩)

📚অর্থাৎ, এই রাতে যে কোনো নেক আমল করলে তা ৮৩ বছর ৪ মাস আমল করার সমান সওয়াব পাওয়া যায়।


২. রাসূল (সা.) লাইলাতুল কদরে বেশি বেশি দান করতেন


ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন:

“রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ছিলেন সকলের মধ্যে সর্বাধিক দানশীল। আর রমাদান মাসে, বিশেষত জিব্রাইল (আ.) যখন তাঁর কাছে আসতেন, তখন তিনি প্রচুর দান করতেন।”

(সহীহ বুখারী: ৬)


📚এই হাদীস থেকে বোঝা যায়, রমাদানে, বিশেষ করে শেষ দশকে রাসূল (সা.) দান-সদকা বেশি করতেন।


🟢দান-সদকার মাধ্যমে গুনাহ মোচন


রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

“দান-সদকা গুনাহ মিটিয়ে দেয়, যেমনভাবে পানি আগুন নিভিয়ে দেয়।”(তিরমিযী: ৬১৪)


📚লাইলাতুল কদরে দান করলে শুধু সওয়াবই নয়, বরং অতীত গুনাহও মাফ হওয়ার সুযোগ রয়েছে।


⁉️কাদেরকে দান করা উত্তম❓


📚লাইলাতুল কদরে দান করার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের অগ্রাধিকার দেওয়া যেতে পারে:


✅ গরিব আত্মীয়-স্বজন: দানের সওয়াব দ্বিগুণ হয় (তিরমিযী: ৬৫৮)

✅ ইসলামিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ

✅ অসহায় ও এতিম শিশুদের সাহায্য

✅ রোজাদারদের ইফতার করানো

✅ ফিলিস্তিন, ইয়েমেন, সিরিয়ার অসহায় মুসলিমদের সাহায্য


কীভাবে দান করা যায়?

📌সরাসরি গরিব ও মিসকিনদের সাহায্য করা।

📌বিশ্বস্ত ইসলামিক সংস্থার মাধ্যমে দান করা।

📌অনলাইনে সাদাকাহ বা যাকাত প্রদান করা।

📌মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল নির্মাণে অর্থ দান করা।


🇧🇩বাংলাদেশ এ লাইলাতুল কদর রমাদানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলো হলোঃ

🚥২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতগুলোর মধ্যে এটি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।


🕋মধ্যপ্রাচ্য,ইউরোপের দেশগুলো এবং আমেরিকান দেশগুলো বেজোড় রাত গুলো হলোঃ


🚥২০,২২,২৪,২৬,২৮তম রাতগুলোর মধ্যে এটি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী।


📚উল্লেখ্য শেষ দশ রাতেই ইবাদাত করা উওম।


এই রাতে বেশি বেশি নামাজ, দোয়া, কুরআন তিলাওয়াত এবং আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা উচিত।


লাইলাতুল কদরে দান-সদকা করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল, যা হাজার মাসের সওয়াবের সমান হতে পারে। তাই আমাদের উচিত এই রাতে বেশি বেশি দান করা এবং গোপনে দান করার চেষ্টা করা, যেন আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।


আল্লাহ আমাদের সবাইকে লাইলাতুল কদরের বরকত লাভ এবং দান-সদকার মাধ্যমে জান্নাতের পথে চলার তাওফিক দান করুন, আমীন!


#Lailatul_qadar

#odd_night 

#ramadan_last10days

No comments:

Post a Comment

 আরাফা দিন: মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় দিন আরাফা দিবস  কী ? আরাফা দিবস হলো হিজরি বছরের ৯ জিলহজ, যেদিন হজ পালনকারীরা মক্কার ...