ইফতার প্রস্তুতি: ইফতারের আগে কী করা উচিত?







ইফতার প্রস্তুতি: ইফতারের আগে কী করা উচিত?

রমজান হল সিয়াম, ইবাদত ও আত্মবিশ্লেষণের মাস, যা সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যাস্তের সময়, ইফতারের মুহূর্তটি অত্যন্ত প্রতীক্ষিত। তবে, ইফতারের সঠিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে রোজার আধ্যাত্মিক ও শারীরিক উপকারিতা সর্বাধিক হয়।

ইফতারের আগে কী করা উচিত?

দোয়া করা ও ইবাদতে মগ্ন থাকা

ইফতারের আগে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময় ফেরত দেওয়া হয় না।” (তিরমিজি)
তাই এই সময়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা, দিকনির্দেশনা ও বরকতের জন্য দোয়া করা উচিত।

সাধারণ কিন্তু পুষ্টিকর ইফতার প্রস্তুত করা

নবী (সা.) ইফতারের জন্য সহজ ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সাধারণত খেজুর ও পানি দিয়ে রোজা ভাঙতেন, যা দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়ক।

অন্যদের সাথে খাবার ভাগ করে নেওয়া

ইফতারের সময় অন্যকে খাওয়ানো অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। নবী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার মতোই পুরস্কার লাভ করবে, তবে রোজাদারের সওয়াব কমানো হবে না।” (তিরমিজি)
তাই পরিবারের জন্য বা অসহায় মানুষদের জন্য অতিরিক্ত খাবার প্রস্তুত করা উচিত।

অতিরিক্ত খাওয়া ও অপচয় এড়ানো

অতিরিক্ত খাওয়া তারাবিহ ও রাতের নামাজকে কঠিন করে তুলতে পারে। নবী (সা.) সবসময় মধ্যপন্থা অবলম্বন করতেন এবং পরিমিত আহারের মাধ্যমে সুস্থতা বজায় রাখতেন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও শান্ত পরিবেশ তৈরি করা

ইফতারের আগে পরিচ্ছন্ন ও শান্ত পরিবেশ বজায় রাখা মনোযোগী ও কৃতজ্ঞতার সাথে ইফতার করতে সহায়ক হয়। পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে ইফতার প্রস্তুতিতে অংশগ্রহণ করানো একতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা

ইফতার পরিবারের সঙ্গে করা সুন্নত ও বরকতময় একটি কাজ। এটি পারিবারিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে এবং একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি করে। নবী (সা.) পরিবার ও সাহাবাদের সঙ্গে ইফতার করতেন, যা আমাদের জন্য অনুকরণীয়।

নিয়মিত দান-সদকা করা

রমজান দানের মাস, আর আল্লাহ এই মাসে দানশীল ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। রাসূল (সা.) বলেছেন: “রোজাদারদের খাওয়ানো, অভাবীদের সাহায্য করা এবং দান করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ কাজ।” (বুখারি)
গরীব ও দুস্থদের সহায়তা করা, মসজিদে অনুদান দেওয়া, এবং যাদের প্রয়োজন তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য।

রাসূল (সা.) কিভাবে ইফতারের প্রস্তুতি নিতেন?

নবী মুহাম্মাদ (সা.) সহজ ও স্বাস্থ্যকর রুটিন অনুসরণ করতেন:

  • খেজুর ও পানি দিয়ে রোজা ভাঙতেন।
  • মাগরিবের নামাজ আদায় করার পর মূল খাবার গ্রহণ করতেন।
  • অতিরিক্ত খাবার পরিহার করতেন, পরিমিত আহার করতেন।
  • আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন খাবারের জন্য।
আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে আমরা ইফতারকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ ও কল্যাণকর করতে পারি।


আল্লাহ যেন আমাদের সকল ইবাদত কবুল করেন এবং এই রমজানকে বরকতময় করেন। আমিন!

No comments:

Post a Comment

 আরাফা দিন: মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় দিন আরাফা দিবস  কী ? আরাফা দিবস হলো হিজরি বছরের ৯ জিলহজ, যেদিন হজ পালনকারীরা মক্কার ...