কুরআন তেলাওয়াত করো , কেন না, কিয়ামতের দিন কুরআন তার পাঠকের জন‍্য সুপারিশ করবে

 

🟢পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘যারা আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদেরকে যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে সৎকাজে ব্যয় করে গোপনে ও প্রকাশ্যে। তাঁরা এমন ব্যবসার আশাবাদী, যাতে কখনও লোকসান হয় না। যাতে আল্লাহ তাদেরকে তাদের পূর্ণ প্রতিফল দেন এবং নিজ অনুগ্রহে আরও বেশি দান করেন। নিশ্চয়ই তিনি অতি ক্ষমাশীল, অত্যন্ত গুণগ্রাহী।   (সূরা ফাত্বির, আয়াত: ২৯-৩০)  


🟢কোরআন এমন সুপারিশকারী যার সুপারিশ তেলাওয়াতকারীর পক্ষে কবুল করা হবে।   হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে , জুবায়েদ রহ. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ রা. বলেছেন, কোরআন এমন সুপারিশকারী যার সুপারিশ তেলাওয়াতকারীর পক্ষে কবুল করা হবে।  এমন বিতর্ককারী যার বিতর্ক তেলাওয়াতকারীর পক্ষে গ্ৰহণ করা হবে। অতএব যে কোরআনকে সামনে রাখবে তেলাওয়াত করবে ও তদানুযায়ী আমল করবে।কোরআন তাকে জান্নাতের দিকে নিয়ে যাবে। আর যে পিছনে রাখবে “কুরআনকে” (তেলাওয়াত করবে না ও তদানুযায়ী আমল করবে না ) কোরআন তাকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে। -(সহিহ ইবনে হিব্বান, হাদিস : ১২৪) 


 *#আসুন_কুরআনের_আঙিনায়#*

    Nazma _akter

সায়্যিদুল ইস্তিগফার (সর্বশ্রেষ্ঠ ইস্তিগফার)

 

সায়্যিদুল ইস্তিগফার (সর্বশ্রেষ্ঠ ইস্তিগফার)

আরবি:
اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي، لا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ، وَأَبُوءُ بِذَنْبِي، فَاغْفِرْ لِي، فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ.

উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বী, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, খালাক্বতানী ওয়া আনা আবদুকা, ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু, আউযু বিকা মিন শার্রি মা সানাতু, আবূউ লাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়া, ওয়া আবূউ বিধানবী, ফাগফিরলী, ফাইন্নাহু লা ইয়াগফিরুয্ জুনূবা ইল্লা আনতা।

বাংলা অনুবাদ:
"হে আল্লাহ! আপনি আমার প্রতিপালক। আপনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, আর আমি আপনার দাস। আমি যথাসাধ্য আপনার অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতিতে অটল আছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি আপনার অনুগ্রহের স্বীকৃতি দিচ্ছি এবং আমার পাপ স্বীকার করছি। অতএব, আমাকে ক্ষমা করুন, কারণ আপনি ছাড়া কেউ পাপ ক্ষমা করতে পারেন না।"

কখন পড়বেন?

  • সকালবেলা (ফজরের পর)
  • সন্ধ্যাবেলা (মাগরিবের পর বা ঘুমানোর আগে)

রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি দৃঢ় বিশ্বাসের সাথে সকালে এই দোয়া পাঠ করবে এবং সন্ধ্যার আগে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর যে সন্ধ্যায় পড়বে এবং সকালে মারা যাবে, সেও জান্নাতে যাবে (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৩০৬)।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে ক্ষমা করুন এবং সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমিন!


ইফতার প্রস্তুতি: ইফতারের আগে কী করা উচিত?







ইফতার প্রস্তুতি: ইফতারের আগে কী করা উচিত?

রমজান হল সিয়াম, ইবাদত ও আত্মবিশ্লেষণের মাস, যা সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। সূর্যাস্তের সময়, ইফতারের মুহূর্তটি অত্যন্ত প্রতীক্ষিত। তবে, ইফতারের সঠিক প্রস্তুতি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যাতে রোজার আধ্যাত্মিক ও শারীরিক উপকারিতা সর্বাধিক হয়।

ইফতারের আগে কী করা উচিত?

দোয়া করা ও ইবাদতে মগ্ন থাকা

ইফতারের আগে দোয়া কবুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: “রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময় ফেরত দেওয়া হয় না।” (তিরমিজি)
তাই এই সময়ে আল্লাহর নিকট ক্ষমা, দিকনির্দেশনা ও বরকতের জন্য দোয়া করা উচিত।

সাধারণ কিন্তু পুষ্টিকর ইফতার প্রস্তুত করা

নবী (সা.) ইফতারের জন্য সহজ ও স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি সাধারণত খেজুর ও পানি দিয়ে রোজা ভাঙতেন, যা দ্রুত শক্তি পুনরুদ্ধারে সহায়ক।

অন্যদের সাথে খাবার ভাগ করে নেওয়া

ইফতারের সময় অন্যকে খাওয়ানো অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। নবী (সা.) বলেছেন: “যে ব্যক্তি রোজাদারকে ইফতার করাবে, সে তার মতোই পুরস্কার লাভ করবে, তবে রোজাদারের সওয়াব কমানো হবে না।” (তিরমিজি)
তাই পরিবারের জন্য বা অসহায় মানুষদের জন্য অতিরিক্ত খাবার প্রস্তুত করা উচিত।

অতিরিক্ত খাওয়া ও অপচয় এড়ানো

অতিরিক্ত খাওয়া তারাবিহ ও রাতের নামাজকে কঠিন করে তুলতে পারে। নবী (সা.) সবসময় মধ্যপন্থা অবলম্বন করতেন এবং পরিমিত আহারের মাধ্যমে সুস্থতা বজায় রাখতেন।

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা ও শান্ত পরিবেশ তৈরি করা

ইফতারের আগে পরিচ্ছন্ন ও শান্ত পরিবেশ বজায় রাখা মনোযোগী ও কৃতজ্ঞতার সাথে ইফতার করতে সহায়ক হয়। পরিবারের সদস্যদের একসঙ্গে ইফতার প্রস্তুতিতে অংশগ্রহণ করানো একতা ও ভালোবাসা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

পরিবারের সঙ্গে ইফতার করা

ইফতার পরিবারের সঙ্গে করা সুন্নত ও বরকতময় একটি কাজ। এটি পারিবারিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে এবং একে অপরের প্রতি ভালোবাসা বৃদ্ধি করে। নবী (সা.) পরিবার ও সাহাবাদের সঙ্গে ইফতার করতেন, যা আমাদের জন্য অনুকরণীয়।

নিয়মিত দান-সদকা করা

রমজান দানের মাস, আর আল্লাহ এই মাসে দানশীল ব্যক্তিদের প্রতি বিশেষ রহমত বর্ষণ করেন। রাসূল (সা.) বলেছেন: “রোজাদারদের খাওয়ানো, অভাবীদের সাহায্য করা এবং দান করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ কাজ।” (বুখারি)
গরীব ও দুস্থদের সহায়তা করা, মসজিদে অনুদান দেওয়া, এবং যাদের প্রয়োজন তাদের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য।

রাসূল (সা.) কিভাবে ইফতারের প্রস্তুতি নিতেন?

নবী মুহাম্মাদ (সা.) সহজ ও স্বাস্থ্যকর রুটিন অনুসরণ করতেন:

  • খেজুর ও পানি দিয়ে রোজা ভাঙতেন।
  • মাগরিবের নামাজ আদায় করার পর মূল খাবার গ্রহণ করতেন।
  • অতিরিক্ত খাবার পরিহার করতেন, পরিমিত আহার করতেন।
  • আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতেন খাবারের জন্য।
আমাদের প্রিয় নবী (সা.)-এর সুন্নাহ অনুসরণ করে আমরা ইফতারকে আরও তাৎপর্যপূর্ণ ও কল্যাণকর করতে পারি।


আল্লাহ যেন আমাদের সকল ইবাদত কবুল করেন এবং এই রমজানকে বরকতময় করেন। আমিন!

রাগ নিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যধারণ: ইসলামের নির্দেশনা

 রাগ নিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যধারণ: ইসলামের নির্দেশনা




ইসলাম আমাদের নৈতিক উন্নতি ও আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখায়। রাগ একটি স্বাভাবিক মানবিক অনুভূতি, তবে এটি সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গুরুত্বপূর্ণ। কুরআন ও হাদিসে রাগ নিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যধারণের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

রাগ নিয়ন্ত্রণের গুরুত্ব

রাগের ফলে আমরা প্রায়ই ভুল সিদ্ধান্ত নেই, যা আমাদের পারিবারিক, সামাজিক ও কর্মজীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন:

"শক্তিশালী সেই ব্যক্তি নয় যে কুস্তিতে অপরকে পরাস্ত করে, বরং প্রকৃত শক্তিশালী সে-ই যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।" (বুখারি, মুসলিম)

রাগ নিয়ন্ত্রণের ইসলামিক উপায়

১. আউযুবিল্লাহ পড়া:

  • রাগ উঠলে "আউযুবিল্লাহি মিনাশ শাইতানির রাজিম" পড়তে বলা হয়েছে।
  • এটি আমাদের অন্তরে শয়তানের প্রভাব কমায় এবং আত্মনিয়ন্ত্রণ বাড়ায়।

২. নীরব থাকা:

  • রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে কেউ রাগ করলে সে যেন চুপ থাকে।" (আহমাদ)
  • নীরবতা রাগের সময় অপ্রয়োজনীয় কথা বলা থেকে রক্ষা করে।

৩. অবস্থান পরিবর্তন করা:

  • রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "যদি তোমাদের কেউ রেগে যায় এবং দাঁড়িয়ে থাকে, তবে সে যেন বসে যায়। যদি তাতেও রাগ না কমে, তবে শুয়ে পড়ুক।" (আবু দাউদ)
  • এটি শারীরিক ও মানসিক চাপ কমিয়ে দেয়।

৪. অজু করা:

  • হাদিসে বলা হয়েছে, "নিশ্চয়ই রাগ শয়তানের পক্ষ থেকে আসে, আর শয়তান আগুন থেকে সৃষ্টি। তাই তোমাদের কেউ রাগ করলে সে যেন ওজু করে।" (আবু দাউদ)
  • ঠান্ডা পানি রাগ প্রশমিত করে।

৫. ধৈর্যধারণ করা:

  • আল্লাহ বলেন, "নিশ্চয়ই আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।" (সুরা বাকারা: ১৫৩)
  • ধৈর্য আমাদের অন্তরে প্রশান্তি এনে দেয় এবং ন্যায়ের পথে থাকতে সাহায্য করে।

ধৈর্যধারণের গুরুত্ব ও উপায়

১. ধৈর্যের মাধ্যমে জান্নাত লাভ:

  • "নিশ্চয়ই ধৈর্যশীলদের প্রতিদান তাদের কর্মের চেয়েও উত্তম।" (সুরা যুমার: ১০)

২. নামাজ ও দোয়া: 

  • আল্লাহ বলেন, "হে মুমিনগণ! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য চাও।" (সুরা বাকারা: ১৫৩)

৩. পরিস্থিতিকে আল্লাহর পরীক্ষা মনে করা:

  • রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, "মুমিনের অবস্থা আশ্চর্যজনক! সে যদি কষ্ট পায়, তবে ধৈর্য ধরে এবং আল্লাহ তাকে পুরস্কৃত করেন।" (মুসলিম)

উপসংহার

রাগ নিয়ন্ত্রণ করা এবং ধৈর্য ধারণ করা একজন মুসলিমের জন্য অপরিহার্য গুণ। কুরআন ও হাদিসের শিক্ষা অনুযায়ী চললে আমরা আত্মনিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যের মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হতে পারবো। আল্লাহ আমাদের সকলকে রাগ নিয়ন্ত্রণ ও ধৈর্যধারণের শক্তি দান করুন। আমিন।

একজন মুসলিমের মনোভাব: ইসলামী দৃষ্টিকোণ

 



একজন মুসলিমের মনোভাব: ইসলামী দৃষ্টিকোণ

ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা যা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সঠিক দিকনির্দেশনা দেয়। একজন মুসলিমের মনোভাব বা দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত, তা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর শিক্ষা ও সুন্নাহ থেকে বোঝা যায়।

মুসলিমের মনোভাব ও চরিত্রের বৈশিষ্ট্য

১. আল্লাহর প্রতি পরিপূর্ণ বিশ্বাস:

  • একজন মুসলিমের মনোভাব হবে সর্বদা আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করা।

  • আল্লাহর হুকুম মেনে চলা এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা।

২. সত্যবাদিতা ও ন্যায়পরায়ণতা:

  • একজন প্রকৃত মুসলিম সর্বদা সত্য কথা বলে এবং ন্যায়পরায়ণতার পথে থাকে।

  • ব্যবসা-বাণিজ্যে, পারিবারিক জীবনে এবং সামাজিক মেলামেশায় সততা বজায় রাখা জরুরি।

৩. অন্যের প্রতি সহানুভূতি ও দয়া:

  • রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমাদের মধ্যে সে-ই উত্তম যে অন্যের প্রতি সদয়।"

  • দরিদ্র, এতিম ও অসহায়দের সাহায্য করা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা।

৪. নম্রতা ও বিনয়:

  • অহংকার ইসলামে নিষিদ্ধ; একজন মুসলিমের মনোভাব হবে নম্র ও বিনয়ী।

  • বিনয়ী মনোভাব সামাজিক শান্তি ও সৌহার্দ্য বজায় রাখতে সহায়ক।

৫. ধৈর্য ও সহনশীলতা:

  • বিপদের সময় ধৈর্য ধারণ করা এবং আল্লাহর ওপর ভরসা রাখা মুসলিমদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

  • রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কঠিন সময়েও ধৈর্যধারণের নির্দেশ দিয়েছেন।

৬. পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও শৃঙ্খলা:

  • ইসলাম পরিচ্ছন্নতাকে ঈমানের অঙ্গ হিসেবে গণ্য করে।

  • ব্যক্তিগত জীবন, পোশাক, ঘরবাড়ি ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

৭. সাহস ও আত্মবিশ্বাস:

  • একজন মুসলিমের উচিত সব পরিস্থিতিতে সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী থাকা।

  • অন্যায় ও অন্যায্যতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর জন্য ইসলামে উৎসাহিত করা হয়েছে।

৮. ধৈর্য ও ক্ষমাশীলতা:

  • রাগ সংবরণ করা ও অন্যদের ক্ষমা করার গুণাবলী ইসলাম অত্যন্ত প্রশংসনীয় মনে করে।

  • রাসূল (সাঃ) সর্বদা ক্ষমাশীল ছিলেন এবং তাঁর অনুসারীদের ক্ষমা ও সহনশীলতা চর্চার নির্দেশ দিয়েছেন।

৯. সতর্ক ও বিচক্ষণতা:

  • একজন মুসলিমের উচিত নিজের প্রতিটি কাজ সম্পর্কে সচেতন থাকা।

  • হালাল-হারাম সম্পর্কে স্পষ্ট জ্ঞান থাকা এবং ভুল পথে না যাওয়ার চেষ্টা করা।


একজন মুসলিমের মনোভাব শুধু ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য নয়, বরং সমাজ ও জাতির উন্নতির জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর আদর্শ অনুসরণ করে, সততা, দয়া, নম্রতা ও ধৈর্যের মাধ্যমে আমরা প্রকৃত ইসলামিক জীবনযাপন করতে পারি।


ইসলামিক জীবনধারা: একটি শান্তিপূর্ণ ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন




ইসলামিক জীবনধারা: একটি শান্তিপূর্ণ ও পরিপূর্ণ জীবনযাপন

ইসলাম শুধুমাত্র একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। একজন মুসলিমের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনার জন্য ইসলামিক জীবনধারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলামের মূল শিক্ষা হলো শান্তি, ন্যায়বিচার ও মানবতার কল্যাণ। বাংলাদেশে ইসলামিক জীবনযাত্রার প্রভাব সুস্পষ্ট, এবং এটি আমাদের সংস্কৃতি ও সামাজিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।

ইসলামিক জীবনধারার মূলনীতি

১. বিশ্বাস ও ইবাদত:

  • ইসলামের পাঁচটি মূল স্তম্ভ হলো শাহাদাহ, সালাত, সাওম, যাকাত ও হজ্জ।
  • নামাজ হলো মুসলমানদের জন্য দৈনন্দিন ইবাদত যা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের অন্যতম উপায়।

২. নৈতিকতা ও আচার-আচরণ:

  • সততা, বিনয়, দয়া ও ক্ষমাশীলতা ইসলামিক জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।
  • অন্যের প্রতি সদাচরণ ও সত্যবাদিতা একজন প্রকৃত মুসলিমের পরিচয়।

৩. পারিবারিক জীবন:

  • পরিবার ইসলামে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাবা-মা, স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনের প্রতি দায়িত্ব পালন করা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা।
  • সন্তানদের সঠিক ইসলামিক শিক্ষায় শিক্ষিত করা প্রতিটি মুসলিম পিতামাতার দায়িত্ব।

৪. অর্থনৈতিক জীবন:

  • ইসলামে সুদ (রিবা) হারাম ঘোষণা করা হয়েছে এবং হালাল উপার্জনের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
  • ব্যবসা-বাণিজ্যে সততা ও ন্যায়পরায়ণতা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দিক।

৫. সামাজিক জীবন:

  • প্রতিবেশী ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন করা ইসলামের অন্যতম শিক্ষা।
  • দান-সদকা ও যাকাত সমাজের দরিদ্র জনগণের কল্যাণে ব্যয় করা উচিত।

বাংলাদেশে ইসলামিক জীবনযাত্রার চর্চা

বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ যেখানে ইসলামিক সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ গভীরভাবে প্রোথিত। ঈদ, রমজান, জুমার নামাজসহ নানা ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান মুসলিমদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ।

উপসংহার

একজন মুসলিমের জন্য ইসলামিক জীবনধারা শুধুমাত্র ধর্মীয় অনুশাসন নয়, বরং এটি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। নৈতিকতা, মানবতা ও কল্যাণের সমন্বয়ে গঠিত এই জীবনধারা অনুসরণ করলে ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।

 

ধৈর্য্য (সবর)

 ধৈর্য্য (সবর)


আল্লাহর হুকুম মেনে চলার সময় মুমিনের ধৈর্যের প্রয়োজন, নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বিরত থাকার সময় তার ধৈর্যের প্রয়োজন, এবং ঐশী হুকুম গ্রহণ করার জন্য তার ধৈর্যের প্রয়োজন। যেহেতু তিনি এই তিনটির একটি বা একাধিক সাথে সর্বদা মোকাবেলা করবেন, মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার ধৈর্যের প্রয়োজন; এটি সবচেয়ে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলির মধ্যে একটি, কারণ এটি ছাড়া জীবন সঠিক হতে পারে না। এটি প্রতিটি সমস্যার জন্য কার্যকরী প্রতিকার।


ভাষাগত পরিভাষায়, সবর (এখানে ধৈর্য হিসাবে অনুবাদ করা হয়েছে) অর্থ সংযম। 

আল্লাহ বলেন: আর ধৈর্য্য ধারণ কর তাদের সাথে যারা সকাল-সন্ধ্যা তাদের পালনকর্তাকে ডাকে।

 [আল-কাহফ 18:28)।


নিজেকে তাদের সাথে রাখুন।


ইসলামী পরিভাষায়, সবর অর্থ নফসকে (নিজেকে) যা পছন্দ করে এবং যা কামনা করে তা অনুসরণ করা থেকে বিরত রাখা এবং আতঙ্কিত হওয়া থেকে বিরত রাখা এবং মহৎ বিষয়ে তার মনোযোগ বজায় রাখতে বাধ্য করা।


ধৈর্যের হুকুম (সবর):


মুসলিম উম্মাহর ঐকমত্য অনুযায়ী ধৈর্য (সবর) ফরজ। আল্লাহ তায়ালা তাঁর নোবেল কিতাবে একাধিক জায়গায় এর নির্দেশ দিয়েছেন, যেমন তিনি বলেছেন: (এবং ধৈর্য (সাবর) ও নামাজের মাধ্যমে সাহায্য প্রার্থনা কর) 

(আল-বাকারাহ ২:৪৫)।


 আরাফা দিন: মুসলিম উম্মাহর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় দিন আরাফা দিবস  কী ? আরাফা দিবস হলো হিজরি বছরের ৯ জিলহজ, যেদিন হজ পালনকারীরা মক্কার ...